:: বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ ৩৫টি এলাকায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একান্ত প্রচেষ্টায় ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন চালু হয়েছে। এর ফলে যে কেউ নিজেদের মোবাইল ফোন, প্যাড ও ল্যাপটপের মাধ্যমে এসব এলাকায় বিনামূল্যে ১০০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট সেবা পাবে পর্যটকসহ স্থানীয়রা। ওই প্রকল্পটি ফলে কক্সবাজারের অধিবাসী ও পর্যটক মিলে প্রায় ৩৮ হাজার মানুষ কোনো ধরণের খরচ ছাড়াই সরকারী ই-পরিষেবাসহ আনলিমিটেড ইন্টারনেট সুবিধা ভোগ করতে পারবে যেইরকউ।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ১ টায় কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি। পরে উদ্বোধনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন-ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বে তরুণ সমাজেই। তরুণ সমাজ তথা ও প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এখন আর বিদেশে শ্রমিক হিসেবে যেতে হবে না। নিজ জেলা কক্সবাজারে বসে প্রযুক্তির মাধ্যামে আয় করতে পারবে।এতে প্রযুক্তি নির্ভর অর্থনৈতিক দেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
মন্ত্রী পলক বলেন,কলাতলী মোড়ে হাংগরের ভাস্কর্যটি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে বিদেশি পর্যটকদের ভীতি ছড়ায়। তারা মনে করে সৈকতে হিংস্র হাংগর আছে। অথচ কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে হিংস্র হাংগর নেই। সুতরাং সেখান থেকে হাংগরের ভাস্কর্যটি সরাতে হবে।
পলক কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যানের কাছে অনুরোধ জানান, কলাতলী মোড়ে সার্ফিং ভাস্কর্য স্থাপন করা জন্য। সেই ভাস্কর্যটি হবে,"ওয়েলকাম টু সার্ফিং সিটি"। যা বিদেশিদের কাছে কক্সবাজার কে সার্ফিং সিটি হিসেবে তুলে ধরবে।
প্রতিমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন-শুধু ফেইসবুকিং করলে হবে না। ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকেও সমৃদ্ধ করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘আমরা একশটি উদ্যোগকে সফলভাবে সবার কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য ১০০টি স্টার্টআপকে বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ড প্রদান করব। যেখানে ১০ লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত তাদেরকে প্রদান করা হবে। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ড আমরা চলমান রাখব।’
তিনি আরও বলেন,২০০১ সালে খালেদা জিয়ার অদক্ষতার কারণে দেশে সাব মেরিন ক্যাবল চালু হয়নি। অথচ তখন সাবমেরিন থাকলে দেশ আজ অনেক এগিয়ে যেত।
অতিথির বক্তব্যে আয়োজনকারি কউক চেয়ারম্যান লে.কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ এলডিএমসি পিএসসি বলেন,কক্সবাজারে সবকিছু আছে।বড় মনের মানুষের মাধ্যমেই ওই শহরের পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব।প্রধানমন্ত্রী মানুষের ভাগ্যেও উন্নয়নের জন্য কক্সবাজারে সবকিছু দিচ্ছেন।তিনি বলেন, “ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পকে সমগ্র বিশ্বের সামনে উপস্থাপনের লক্ষ্যেই বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদানের এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমুদ্র সৈকতসহ পুরো শহরটাকেই পর্যায়ক্রমে ফ্রি ওয়াই-ফাই জোনের আওতায় আনা হবে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ও এই প্রোজেক্টে কারিগরি সহযোগিতা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়েকে আমি ধন্যবাদ জানাই”।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন, কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ,জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আমিন আল পারভেজ,কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল করিম চৌধুরী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কউকের সদস্য (প্রকৌশল) লে.কর্ণেল মোহাম্মদ আনোয়ার উল ইসলাম, কউক সচিব (উপসচিব) আবু জাফর রাশেদ, প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাসহ স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে,কক্সবাজারে ফ্রি ওয়াইফাই স্থাপনের জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সাথে সমঝোতা স্মারক সম্পাদন করেন।